Rabiul Islam শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০১৪

বাইতুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাদরাসায় আমার দু'বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। আমি এখন বাইতুর রাসূল (সঃ) এর ফারেগ ছাত্র। এর আগেও আমি ফারেগ হয়েছিলাম, হাজারীবাগ দারুল উলুম মাদরাসা থেকে, সেখানে তখন তৃতীয় বর্ষ পর্যন্তই ছিল ! 



পরীক্ষা শেষে দুপুর বেলা যখন আখেরী মজমায় সবাই একত্রিত হল, আমাদের বর্ষের পাঁচ জনকে মাদানী হুজুর সকলের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে বললেন। পীর সাহেব কথা বললেন, আলামিন ভাই হিজবুল্লাহ ভাই আহসানুল্লাহ ভাইও কথা বললেন!
তারা বললেন নিজেদের কথা, আমাদের কথা, পঞ্চম বর্ষের কথা! আবেগ, ভালবাসা আর হৃদয়ের ব্যকুলতা নিয়ে তারা কথা বললেন, কাঁদলেন, কাঁদালেন, সকলের কাছে দোয়া চাইলেন, ক্ষমা চাইলেন... 

তারপর উসতাদগন কথা বললেন, নসীহত করলেন, দিক নির্দেশনা দিলেন। উস্তাদগন এই কাজটা সবসময়েই করেন, কিন্তু আমাদের অক্ষমতা... আমরা এগুলো ধারণ করতে পারিনা, মেনে চলতেও পারিনা...
ছুটির পর মাদানী হুজুর আমাদের কামরায় আসলেন, কিছু কথা বললেন, সকলের সাথে মুসাফাহ্‌ করলেন এবং...
এবং সকলের সাথে মুয়ানাকাহ্‌ করলেন!! এর আগে আমি কখনো কোন উস্তাদের সাথে বুক মিলাইনি,  এমনিতেই আমি সবসময় উস্তাদদের থেকে দূরে দূরে থাকি। কোন উস্তাদের সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গতাও তৈরি হয় নি। আমি জানি এটা মোটেও প্রশংসাযোগ্য নয়, কিন্তু এটাই আমার ‘তবিয়ত’।
মাদানী হুজুরের সাথে যখন কোলাকুলি করলাম তখন আমার ভিতরের অনুভূতিগুলো কেমন যেন জট পাকিয়ে গেল, আমি বুঝতে পারছিলাম না যে আসলে কি হচ্ছে, আমি কি করছি, আমার কিই বা করা উচিত!
যখন আলিঙ্গনমুক্ত হলাম, তিনি অন্যান্য তালিবুল ইলমদের সাথে মুয়ানাকাহ করতে লাগলেন... তখন কেন জানি আমার বুকের ভিতরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলাম, কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখ দিয়ে যাকে বলে অঝোর ধারায় পানি পরতে লাগলো। আমি কাঁদলাম, কেন কাঁদলাম জানিনা, তবে সেদিন আমার কাঁদতে ভালো লেগেছিল... খুবই ভালো লেগেছিল !
রাতে বাকি সকল উস্তাদগনের সাথে দেখা হয়েছিল, কথা হয়েছিল, মুসাফাহও হয়েছিল। দুপুরে সহপাঠী মাহমূদ চলে গিয়েছে তাই তার সাথেও মুসাফাহ মুয়ানাকাহ হয়েছিল।
অন্যান্য তালিবুল ইলমরা সকালে যাবে, আমি সকালে এসে সকলের সাথে মুসাফাহ করব এই বলে বাসায় ঘুমাতে আসলাম, কিন্তু পরের দিন সকালে আর মাদরাসায় যেতে পারিনি! কারো সাথে সাক্ষাতও হয়নি, রাফি ভাই,আলামিন ভাই এ.কে. খান! ভাই, মুহাম্মদ হুসাইন ভাই দুই দিনের জন্য মুন্সিবারি মসজিদে তাবলীগ জামাতের সাথে ছিলেন। তাদের সাথে দেখা হয়েছিল।
আজ শুক্রবার, আগামীকাল রাতের বাসেই ইনশাআল্লাহ আমি কুড়িগ্রাম চলে যাব, আম্মু-আব্বুর সাথে সারা রমজান সেখানেই কাটাব, ঈদের পর ফিরব। দোয়া করবেন যাতে ঈদের ছয় সাত দিন পরের টিকিট পেয়ে যাই !

তারপর ভর্তিপরিক্ষা দেয়ার জন্য ছোটাছোটি শুরু করব, প্রথমে যাবে জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, সেখানে না হলে আমার ইচ্ছা হল লালবাগ মাদরাসায় যাওয়া, কারন সেটা মোটামোটি আমাদের বাসার কাছেই J । তবে নানা যায়গা থেকে লালবাগ ভর্তি হওয়ার ব্যপারে বাধা আসে, তাই অন্য কোথায়ও ভর্তি হয়ে যেতে পারি... আল্লাহ তায়ালা সাহায্য করুন! আমীন। 

আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

কিছু লেখা

Copyright © রবিউল ইসলাম - Powered by Blogger