Rabiul Islam শুক্রবার, ৩০ মে, ২০১৪

আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে সীরাত প্রতিযোগিতার পুরষ্কার 'এন্ড্রয়েড ট্যাব'টি আজ ইউসুফ সুলতান সাহেব হুজুর থেকে নিয়ে আসলাম।




সকালে দরসের পরই সোয়া বারটার দিকে রওনা হয়ে যাই, সাথে মোহাম্মাদুল্লাহ আর আহসানুল্লাহ ভাইও ছিল। গুলিস্তান হয়ে মালিবাগ রেলগেট, বাইতুল ফালাহ মসজিদে নামাজ পড়ি। ইউসুফ সুলতান সাহেব সেখানের খতীব, বয়ানে তার একটি কথা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে, তিনি মানুষকে একশত বছর আগের কম্পিউটারের সাথে তুলনা দিয়েছেন। যেগুলো নাকি ইয়া বিশাল আকৃতির হত, বিশাল যায়গা নিয়ে সেটাকে সেটাপ করতে হত, সেগুলোর একেকটা পার্টস হত একটা রুমের সমান, অথচ সেই কম্পিউটার সামান্য যোগ-বিয়োগ টাইপ অংক করতেই কয়েক ঘন্টা সময় লাগাত।
আচ্ছা সেই কম্পিউটার কি কখনো বুঝতে পেরেছিল যে তার যেটুকু ক্ষমতা সেটা নিতান্তই অল্প! আসলে সেটার ক্ষমতা এতই কম ছিল যে সেটা কখনো বুঝতে পারেনি যে তার ক্ষমতা আসলেই কম!!
বর্তমান আধুনিক কম্পিউটারগুলোর ক্ষমতা এত বেশি যে সেগুলোর একটার সমান ক্ষমতাধর কম্পিউটার যদি সেই একশত বছর আগে বানানো হত তাহলে সেটার কলেবর সৌরজগতের গ্রহগুলোর পথে বাধা সৃষ্টি করত!!
আচ্ছা, বর্তমান আধুনিক কম্পিউটার কি এটা বুঝতে পারে যে তার ক্ষমতা খুবই সামান্য!সেকি কখনো বুঝতে পারবে যে, তাকে যে বানিয়েছে সে "মানুষ" কথ ক্ষমতাধর। সেকি কখনো বুঝতে পারবে মানুষের ক্ষমতা !!!
পারবেনা, কারণ সে যত উন্নতই হোক না কেন, যত ক্ষমতাধর চিন্তাশক্তির অধিকারীই হোক না কেন মানুষই হল সেগুলোর স্রষ্টা। মানুষের চিন্তাধারা ও জ্ঞানের কাছে একটি আধুনিক কম্পিটার বা ভবিষ্যতের অত্যাধুনিক কম্পিউটারের জ্ঞান ও চিন্তাধারা (লজিক!) হল সীমাবদ্ধ, এবং সংক্ষিপ্ত।

তো যেরকম ভাবে একটি কম্পিউটার কখনো মানুষের ক্ষমতা বুঝতে পারেনা, সেরকম ভাবে কোন মানুষও তার স্রষ্টা আল্লাহ তায়ালার ক্ষমতা বুঝতে পারবে না, আল্লাহ তায়ালার ক্ষমতা নিয়ে চিন্তা করবে, চিন্তা করতে করতে একসময় সে ক্লান্ত হয়ে পড়বে, কিন্তু আল্লাহ তায়াল ক্ষমতা সে বুঝতে পারবেনা। কারণ আল্লাহ তায়ালার কুদরতের সামনে সকল মানুষের জ্ঞান ও চিন্তাশক্তি সীমিত, সীমাবদ্ধ। যদিও এটাও মানুষ বুঝতে পারেনা, কারণ তাদের আসলে এটা বোঝার মত শক্তি বা ক্ষমতাও নেই, যেমন নেই একটা কম্পিউটারের...

বিশাল একটা বয়ান করে ফেললাম। ইউসুফ সুলতান সাহেবকে জাঝাকাল্লাহ, তার বয়ানের জন্য।
তো নামাজ শেষে আমরা তিনজন তার সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম, দেখি নামাজের পর বেশ কয়েকজন মুসল্লি তার নিকট গোল হয়ে বসেছে, আমরাও গেলাম। সেখানে কয়েকজন তার কাছে মাসয়ালা জিজ্ঞাস করছে আর তিনি সেগুলোর উত্তর দিচ্ছিলেন, আমিও একটা প্রশ্ন করেছিলাম, ডিজিটাল ক্যামেরা বা মোবাইল দিয়ে মানুষ বা প্রনীর ছবি তোলা জায়েজ কিনা? তিনি সুন্দর করে সেটার উত্তর দিয়েছেন। জাঝাকাল্লাহ।

তারপর আমাদের সাথে তিনি কথা বললেন, ট্যাবটা আমাকে দিলেন এবং... আমার একটা ইচ্ছা ছিল যে আমি হুজুরকে বলব, পুরষ্কার বিতরণের দিন তো সবাই আপনার সাথে ছবি তুলেছে, এখানে আমিও আপনার সাথে ছবি তুলব। কিন্তু মসজিদ এর ভিতরে তিনি ছবি তুলতে সংকোচবোধ করছিলেন বিধায় আর বলিনি... তবে মজার ব্যপার কি জানেন :) একটু পর তিনিই আমার ছবি তুললেন :P

তার কাছে থেকে বিদায় নিয়ে (তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, আপনার এই কার্যক্রম/অগ্রগতি অব্যহত থাকুক!! যেটা আসলে তিনিই আমাকে প্রথম বলেছেন :)  ) মালিবাগ জামিয়া মাদরাসায় আসলাম, আহসানুল্লাহ ভাইয়ের পরিচিত তাকমীল জামাতের বরকত ভাই আমাদেরকে মেহমানদারী করলেন :) , জাঝাকাল্লাহ, বরকত ভাই !
সেখানে আমার কাছে ট্যাবটি দেখে অনেকে জানতে চেয়েছিল সেটা কোথা থেকে পেয়েছি, বলার পর লক্ষ করলাম, সীরাতের এ বিষয়টা সে মাদরাসার অন্তত তাকমীল জামাতের বেশির ভাগ তালিবুল ইলমই জানেনা।

চারটার দিকে সেখান থেকে রওনা দিয়ে বাসার সামনে এসে মসজিদে আসরের নামাজ পড়লাম।

এখন দারুল উলুম মাদরাসায় মাহফীল চলছে, বিরিয়ানি খেতে সেখানে যাব... খোদা হাফেজ!!
(দাওয়াত দিলাম না বলে আবার রাগ করবেন না কিন্তু!! )


আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

কিছু লেখা

Copyright © রবিউল ইসলাম - Powered by Blogger